যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্টদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত খুনিরা যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশের মাটিতে লুকিয়ে আছে। আমরা আশ্বস্ত হয়েছি যে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনে চ্যাম্পিয়ান যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধুর খুনিকে শিগগিরই বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে।
শনিবার জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডকে মানব সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে স্বাধীনতার চেতনা, স্বাধীন গণতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। তিনি বলেন, হত্যাকারীরা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সাথে হাত মিলিয়ে জেনারেল জিয়ার নেতৃত্বে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, গণতন্ত্রকে হত্যা এবং হত্যা ক্যূ ষড়যন্ত্রের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, জেনারেল জিয়া সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত এবং কুক্ষাত ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স প্রণয়ন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করে এবং খুনিদের বাংলাদেশের বিদেশি মিশনে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে কুক্ষাত ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিল করে খুনিদের বিচার কাজ সম্পন্ন করেন এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার রায় কার্যকর করেন। এটা সবার কাছে পরিষ্কার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কোনো মূল্যে গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বদ্ধপরিকর।
ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতীয় জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়। দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা কালোব্যাচ পরিধান করে স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং ৭৫ এর ১৫ আগস্টে নির্মমভাবে নিহত তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন এবং তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ধনিমিত করার মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে দূতাবাস প্রাঙ্গণে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং মহান নেতার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করা হয়।
দিবসের অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে ছিল জাতীয় নেতৃবৃন্দের বাণী পাঠ, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং ১৫ আগস্টে নিহত শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। দূতাবাসের ডিফেন্স এ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম মঈনুল হাসান, কাউন্সেলর (পলিটিক্যাল) দেওয়ান আলী আশরাফ, মিনিস্টার (ইকনমিক) মো. মেহেদী হাসান এবং মিনিস্টার (কনস্যুলার) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বাণীগুলো পাঠ করেন। প্রথম সচিব এবং চ্যান্সারী প্রধান মো. মাহমুদুল ইসলাম দিবসের কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
সবশেষে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা, বাংলাদেশে অব্যাহত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়।